সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:২৪ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক: অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৭৯৮-৬৭৬৩০১
ভোট দেয়া থেকে বিরত যুক্তরাষ্ট্র-ভারত, গাযায় সহিংসতা তদন্ত করবে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ

ভোট দেয়া থেকে বিরত যুক্তরাষ্ট্র-ভারত, গাযায় সহিংসতা তদন্ত করবে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ

আমার সুরমা ডটকম ডেস্ক:

হামাসের সঙ্গে ইসরাইলের সাম্প্রতিক সংঘর্ষের সময় যে সহিংসতা হয়েছে সেটা তদন্ত করে দেখতে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। কয়েকটি ইসলামিক দেশ এই প্রস্তাব পেশ করার পর এর পক্ষে ২৪টি আর বিপক্ষে ৯টি ভোট পড়েছে। তবে ভোট দেয়া থেকে বিরত ছিল যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত।

যুক্তরাষ্ট্র সতর্ক করে দিয়েছে যে এই সিদ্ধান্তের ফলে ওই অঞ্চলে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য গৃহীত উদ্যোগ হুমকির মুখে পড়বে। দেড় সপ্তাহের তীব্র সংঘর্ষে গাযায় অন্তত ২৪২ জন এবং ইসরাইলে ১৩ জন নিহত হয়েছে। মিশরের মধ্যস্থতায় গত শুক্রবার এক সমঝোতার পর এই যুদ্ধ বন্ধ হয়েছে। অধিকৃত পূর্ব জেরুসালেমে ইসরাইলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে কয়েক সপ্তাহের উত্তেজনার পর এই সংঘর্ষ শুরু হয়। মুসলিম ও ইহুদিদের কাছে পবিত্র স্থান হিসেবে বিবেচিত আল-আকসা মসজিদে সংঘর্ষ শুরু হলে হামাস সেখান থেকে ইসরাইলি সৈন্য প্রত্যাহার করে নেওয়ার দাবি জানায়। পরে তারা ইসরাইলকে লক্ষ্য করে রকেট নিক্ষেপ করতে শুরু করে। এর জবাবে গাযায় বিমান থেকে হামলা চালাতে শুরু করে ইসরাইল।

ইসলামিক দেশগুলোর সংস্থা ওআইসি এবং ফিলিস্তিনি প্রতিনিধি দল জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে যে প্রস্তাবটি পেশ করেছে তাতে ইসরাইল, গাযা এবং পশ্চিম তীরে যেসব মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে সেগুলো তদন্ত করে দেখার জন্য একটি স্থায়ী তদন্ত কমিশন গঠনের কথা বলা হয়েছে। এছাড়াও ‘সেখানে বারবার যে উত্তেজনা, অস্থিতিশীলতা ও যুদ্ধাবস্থা তৈরি হচ্ছে তার প্রকৃত কারণ’ খুঁজে বের করার কথা বলা হয়েছে ওই প্রস্তাবে।

হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের অধিবেশনের শুরুতে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান মিশেল ব্যাশেলেট বলেন গাযায় প্রচুর সংখ্যক মানুষের হতাহত হওয়ার ঘটনায় তিনি উদ্বিগ্ন। তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন যে গাযায় ইসরাইল যে হামলা চালিয়েছে সেটা যুদ্ধাপরাধ হিসেবেও বিবেচিত হতে পারে। এছাড়াও ইসরাইলকে লক্ষ্য করে হামাস যেভাবে রকেট ছুঁড়েছে তারও সমালোচনা করে তিনি বলেছেন, ‘নির্বিচারে’ এসব নিক্ষেপ করা হয়েছে যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের ‘সুস্পষ্ট লঙ্ঘন’।

কয়েকটি পশ্চিমা দেশসহ নয়টি সদস্য দেশ এই প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। আর ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল ১৪টি দেশ। চীন ও রাশিয়াসহ ২৪টি দেশ ভোট দিয়েছে প্রস্তাবের পক্ষে। এই বিতর্কে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত অংশ নেয়নি। তবে জেনেভায় জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের মিশন ভোটের পর একটি বিবৃতি দিয়ে এধরনের উদ্যোগে দুঃখ প্রকাশ করেছে। ‘এটা খুবই দুঃখজনক যখন আমরা এবং অন্যান্যরা মিলে যুদ্ধবিরতিকে ধরে রাখতে এবং আরো জোরালো করার জন্য কাজ করছি, যাতে গাযায় মানবিক সহযোগিতা নিশ্চিত করা যায়, এবং স্থায়ী শান্তি অর্জনে কাজ করছি তখন হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের কিছু সদস্য এমন এক বিভ্রান্তি সৃষ্টির পথ বেছে নিয়েছে যা বর্তমান কূটনৈতিক চেষ্টায় কোনো কিছু যোগ করবে না,’ বলা হয়েছে বিবৃতিতে।

ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই প্রস্তাবের নিন্দা করেছেন। তিনি একে উল্লেখ করেছেন ‘জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের ইসরাইল-বিরোধী অবস্থানের আরো একটি উদাহরণ’ হিসেবে। তবে ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এই উদ্যোগে ‘জবাবদিহিতা, আইনের প্রয়োগ এবং ফিলিস্তিনি জনগণকে রক্ষার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃঢ় অবস্থান প্রতিফলিত হয়েছে।’ অন্যদিকে, ইসরাইলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এখনই পদক্ষেপ নেওয়ার আহবান জানিয়েছে হামাস।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্টনি ব্লিঙ্কেন তিনদিন ধরে মধ্যপ্রাচ্য সফর করার পর জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে এই প্রস্তাব গৃহীত হলো। মঙ্গলবার পশ্চিম তীর সফরের সময় তিনি যুদ্ধবিরতির আরো শক্তিশালী করার আহ্বান জানান এবং গাযার পুনর্গঠনে সাহায্য দেয়ার অঙ্গীকার করেন। এর আগে ইসরাইলের নিরাপত্তার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের ‘প্রতিশ্রুতির’ কথাও তিনি তুলে ধরেছেন। সূত্র: বিবিসি, টিওআই।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com